গত
বছরের মার্চে বিটিআরসি জানিয়েছিল, তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৫ সালের
মধ্যে স্যাটেলাইটটি পাঠানো হতে পারে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, আরো এক বছর সময়
বেশি লাগতে পারে। বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে
কাঙ্ক্ষিত এ স্যাটেলাইটের জন্য অরবিটাল স্লট (১১৯ দশমিক ১ই) পেতে
রাশিয়াভিত্তিক মহাকাশ যোগাযোগবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান
'ইন্টারস্পুটনিক'-এর সঙ্গে করা হয়েছে একটি প্রাথমিক নন বাইন্ডিং সমঝোতা।
এখন খোঁজা হচ্ছে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রায় চার হাজার কোটি টাকার
সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার জোগানদাতা। এ জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও
ইউএনডিপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। অরবিটাল স্লট ভাড়া নেওয়া হবে,
নাকি কিনে নেওয়া হবে, আর এসবের জন্য কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হতে পারে_সে
বিষয়গুলো অবশ্য এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এদিকে 'ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন
ইউনিয়ন' (আইটিইউ) থেকে নিজস্ব অরবিটাল লোকেশন (৬৯, ১০২ ও ১৩৩ ডিগ্রি পূর্ব
দ্রাঘিমাংশ) ও এর জন্য প্রয়োজনীয় ফ্রিকোয়েন্সি পাওয়ার জন্যও প্রচেষ্টা
অব্যাহত রাখা হয়েছে।
বিদেশি পরামর্শক
বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কার্যক্রমে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১০ সালে এঙ্প্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বান করা হয়। এতে সাড়া দেয় বিভিন্ন দেশের ৩১টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা হলে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তাদের কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করে। এরপর 'সরকারি ক্রয়নীতি (পিপিআর)-২০০৮' অনুসরণ করে ওই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়ন শেষে 'স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল'(এসপিআই) কৃতকার্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়।
তিন বছরের মধ্যে মহাকাশে দেশের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ 'বঙ্গবন্ধু-১' উৎক্ষেপণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২৯ মার্চ বিটিআরসি এবং এসপিআইয়ের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ ও এসপিআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রুস ক্রাসলসকি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাবি্লউ মজিনাও উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে, উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য বাজার পর্যবেক্ষণ, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, আইটিইউয়ের সঙ্গে তরঙ্গ সমন্বয়, স্যাটেলাইট সার্ভিস ডিজাইন, স্যাটেলাইট আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, সিস্টেম ডিজাইন, দরপত্র প্রস্তুত, ম্যানুফ্যাকচারিং ও সুষ্ঠুভাবে উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণের কাজ করবে। এ ছাড়া জনবল তৈরিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া।
ইন্টারস্পুটনিক
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিটিআরসির ১৪৭তম সভায় স্যাটেলাইটের বিষয়টি বিস্তারিত উপস্থাপন করেন বিটিআরসি কমিশনার এ টি এম মনিরুল আলম। তিনি জানান, আইটিইউ থেকে নিজস্ব অরবিটাল লোকেশন ও প্রয়োজনীয় ফ্রিকোয়েন্সি পাওয়া একটি জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার বিষয়। এ কারণে যথাসময়ে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নিশ্চত করার জন্য এসপিআই অন্য কোথাও থেকে অরবিটাল পজিশন ভাড়া বা কেনার পরামর্শ দেয়। এসপিআই জানায়, রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান ইন্টারস্পুটনিক তাদের মালিকানাধীন অরবিটাল লোকেশন ১১৯ই ও ১১৯এফ বিক্রির আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে এই অরবিটাল লোকেশন ভাড়া বা কেনার জন্য এর প্রযুক্তিগত ও আর্থিক শর্তের বিষয়ে ইন্টারস্পুটনিকের সঙ্গে একটি ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট করতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ জানুয়ারি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আর্থিক ও আইনি সংশ্লেষ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে একটি নন বাইন্ডিং সমঝোতা স্মারকে সম্মতি দেয়। এদিকে এই সমঝোতা স্মারকের আগে ইন্টারস্পুটনিক বাংলাদেশকে এসপিআইয়ের মাধ্যমে এই তাগাদা দেয় যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বড় মাপের স্যাটেলাইট অপারেটর 'এসইএস অস্ট্রা' তাদের ওই অরবিটাল পজিশন ভাড়া বা কিনে নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিষয়টি সম্পর্কে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু বকর সিদ্দীক বলেন, 'এ কাজের দায়দায়িত্ব এখন বিটিআরসির। আমরা বিটিআরসিকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়ে দিয়েছি।' বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস সম্প্রতি জানান, 'আইটিইউতে আমরা নিজস্ব অরবিটাল পজিশন পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অনেক দেশ তাতে আপত্তি জানিয়েছে। প্রক্রিয়াগত কারণে এ ধরনের আপত্তি অস্বাভাবিকও নয়। দেনদরবার এখনো চলছে। কিন্তু অনিশ্চয়তার মধ্যে না থেকে আমরা ইন্টারস্পুটনিকের সঙ্গে একটা সমঝোতায় আসার চেষ্টা করছি।'
সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা
বিটিআরসির ধারণা, কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে সরকারের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রচারভিত্তিক সেবা প্রসার সহজতর হবে, বৈশ্বিক টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতার অবসান হবে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রযুক্তির দিক দিয়ে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে।
বিটিআরসির হিসাবে, দেশের একেকটি টিভি চ্যানেল বিদেশি স্যাটেলাইটগুলোকে ভাড়া বাবদ বছরে প্রায় দুই লাখ ডলার দিয়ে থাকে। সে হিসাবে বর্তমানে ১৯টি টিভি চ্যানেল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে বছরে প্রায় ৪০ লাখ ডলার ভাড়া দিতে হচ্ছে। দেশের নিজস্ব উপগ্রহ হলে এ অর্থ দেশেই থেকে যাবে। এসপিআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রুস ক্রাসলস্কি জানান, 'যোগাযোগ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করার পর বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে আয় করতে পারবে।'
বিদেশি পরামর্শক
বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কার্যক্রমে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১০ সালে এঙ্প্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বান করা হয়। এতে সাড়া দেয় বিভিন্ন দেশের ৩১টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা হলে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তাদের কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করে। এরপর 'সরকারি ক্রয়নীতি (পিপিআর)-২০০৮' অনুসরণ করে ওই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়ন শেষে 'স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল'(এসপিআই) কৃতকার্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়।
তিন বছরের মধ্যে মহাকাশে দেশের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ 'বঙ্গবন্ধু-১' উৎক্ষেপণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২৯ মার্চ বিটিআরসি এবং এসপিআইয়ের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ ও এসপিআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রুস ক্রাসলসকি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাবি্লউ মজিনাও উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে, উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য বাজার পর্যবেক্ষণ, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, আইটিইউয়ের সঙ্গে তরঙ্গ সমন্বয়, স্যাটেলাইট সার্ভিস ডিজাইন, স্যাটেলাইট আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, সিস্টেম ডিজাইন, দরপত্র প্রস্তুত, ম্যানুফ্যাকচারিং ও সুষ্ঠুভাবে উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণের কাজ করবে। এ ছাড়া জনবল তৈরিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া।
ইন্টারস্পুটনিক
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিটিআরসির ১৪৭তম সভায় স্যাটেলাইটের বিষয়টি বিস্তারিত উপস্থাপন করেন বিটিআরসি কমিশনার এ টি এম মনিরুল আলম। তিনি জানান, আইটিইউ থেকে নিজস্ব অরবিটাল লোকেশন ও প্রয়োজনীয় ফ্রিকোয়েন্সি পাওয়া একটি জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার বিষয়। এ কারণে যথাসময়ে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নিশ্চত করার জন্য এসপিআই অন্য কোথাও থেকে অরবিটাল পজিশন ভাড়া বা কেনার পরামর্শ দেয়। এসপিআই জানায়, রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান ইন্টারস্পুটনিক তাদের মালিকানাধীন অরবিটাল লোকেশন ১১৯ই ও ১১৯এফ বিক্রির আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে এই অরবিটাল লোকেশন ভাড়া বা কেনার জন্য এর প্রযুক্তিগত ও আর্থিক শর্তের বিষয়ে ইন্টারস্পুটনিকের সঙ্গে একটি ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট করতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ জানুয়ারি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আর্থিক ও আইনি সংশ্লেষ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে একটি নন বাইন্ডিং সমঝোতা স্মারকে সম্মতি দেয়। এদিকে এই সমঝোতা স্মারকের আগে ইন্টারস্পুটনিক বাংলাদেশকে এসপিআইয়ের মাধ্যমে এই তাগাদা দেয় যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বড় মাপের স্যাটেলাইট অপারেটর 'এসইএস অস্ট্রা' তাদের ওই অরবিটাল পজিশন ভাড়া বা কিনে নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিষয়টি সম্পর্কে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু বকর সিদ্দীক বলেন, 'এ কাজের দায়দায়িত্ব এখন বিটিআরসির। আমরা বিটিআরসিকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়ে দিয়েছি।' বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস সম্প্রতি জানান, 'আইটিইউতে আমরা নিজস্ব অরবিটাল পজিশন পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অনেক দেশ তাতে আপত্তি জানিয়েছে। প্রক্রিয়াগত কারণে এ ধরনের আপত্তি অস্বাভাবিকও নয়। দেনদরবার এখনো চলছে। কিন্তু অনিশ্চয়তার মধ্যে না থেকে আমরা ইন্টারস্পুটনিকের সঙ্গে একটা সমঝোতায় আসার চেষ্টা করছি।'
সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা
বিটিআরসির ধারণা, কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে সরকারের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রচারভিত্তিক সেবা প্রসার সহজতর হবে, বৈশ্বিক টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতার অবসান হবে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রযুক্তির দিক দিয়ে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে।
বিটিআরসির হিসাবে, দেশের একেকটি টিভি চ্যানেল বিদেশি স্যাটেলাইটগুলোকে ভাড়া বাবদ বছরে প্রায় দুই লাখ ডলার দিয়ে থাকে। সে হিসাবে বর্তমানে ১৯টি টিভি চ্যানেল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে বছরে প্রায় ৪০ লাখ ডলার ভাড়া দিতে হচ্ছে। দেশের নিজস্ব উপগ্রহ হলে এ অর্থ দেশেই থেকে যাবে। এসপিআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রুস ক্রাসলস্কি জানান, 'যোগাযোগ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করার পর বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে আয় করতে পারবে।'
No comments:
Post a Comment