Wednesday, April 24, 2013

হতে চাইলে 'অনলাইন' কারবারি

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন আল বেরুনী। অবসর সময়ের বেশির ভাগই কাটে ব্লগ লিখে। তবে শখে নয়, তিনি ব্লগ লেখেন বাড়তি আয়ের জন্য। এখানকার আয় কখনো কখনো চাকরির বেতনও ছাড়িয়ে যায়। সুজন একা নন, এরই মধ্যে অর্ধলক্ষাধিক বাংলাদেশি তরুণ অনলাইনে নিজস্ব ব্যবসা খুলেছেন। গ্রাহকদের সেবা ও পরামর্শ দিয়ে তাঁরা আয় করছেন বৈদেশিক মুদ্রা।






যেভাবে শুরু করতে পারেন:
'প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়া কঠিন কিছু নয়। নির্দিষ্ট লক্ষ্য রেখে নেমে পড়লেই হলো। এ কাজের জন্য এখনই শ্রেষ্ঠ সময়।' কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনটাই বললেন আল বেরুনী। তিনি জানান, অনেক ধরনের সেবা নিয়েই অনলাইন ব্যবসা চালু করা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা। নিজের দক্ষতা না থাকলেও এ ব্যবসা করা যাবে; সে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কাউকে নিয়োগ দিতে হবে। তবে পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। কয়েকজন মিলেও এ ধরনের উদ্যোগ শুরু করা যেতে পারে।
প্রথমে খুব ভালো মানের তথ্য (কনটেন্ট) দিয়ে প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়েবসাইট খুলতে হবে, যাতে গ্রাহক সাইটটি দেখে পূর্ণ আস্থা পায়। এরপর সাইটে যুক্ত করতে হবে নির্ভরযোগ্য কোনো পেমেন্ট গেটওয়ে (কাজ শেষে অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা)। এরপর গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিলে অনলাইনেই পাওয়া যাবে ডলার।
অনলাইন উদ্যোক্তা এবং ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষক তাহের চৌধুরী সুমন বলেন, 'অনলাইন ব্যবসার জন্য অনেক বিষয় রয়েছে। তবে যাঁরা নতুন, তাঁরা সহজে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, লিংক বিল্ডিং, ওয়েবসাইট ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্ট, অ্যাফিলিয়েশন মার্কেটিং, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, আর্টিকল লেখালেখি বা এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করা ছাড়াও বিভিন্ন ওয়েবসাইট বিনির্মাণের (কাস্টমাইজ করা) কাজ শিখতে পারেন। গ্রাহক পেতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে পারেন নিজের সাইটকে। বিভিন্ন ফোরাম এবং অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও গ্রাহক পাওয়া যেতে পারে।'

হাত বাড়ালেই বন্ধু:
প্রথম দিকে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ফোরাম, ব্লগ আর ওয়েবসাইটই ছিল এই ব্যাখ্যা শেখার একমাত্র উপায়। এখন বাংলাদেশি অনেকে অনলাইনভিত্তিক এ ব্যবসায় নামছেন। এ ক্ষেত্রে সহায়তা করার লোকের সংখ্যা এখন অনেক। ফেইসবুক এবং বিভিন্ন ব্লগে এখন স্থানীয় কমিউনিটি (দল) তৈরি হয়েছে, যাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সহজেই না জানা বিষয় শেখা সম্ভব।
এ ব্যাপারে সফল ফ্রিল্যান্সার আল-আমিন বলেন, 'বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঘুরতে ঘুরতেই অনলাইন ব্যবসার পরিকল্পনা পাই। এরপর বিষয়ভিত্তিক তথ্য খুঁজেছি, নিজে সেগুলো পরীক্ষা করে করে শিখেছি। কোনো সমস্যায় পড়লে তখন কারো পরামর্শ বা সহায়তা পাইনি, জানতে পারিনি কোন সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়। আর এখন তো বাংলাদেশি ওয়েব কমিউনিটি বেশ শক্তিশালী। একে অন্যকে সাহায্য করার প্রবণতাও বেড়েছে। এ জন্য বলব, এসব কমিউনিটির সহায়তা নিয়ে তরুণরা কাজ শুরু করতে পারেন। সাহস করে পথে নামলেই এখানে সফল হওয়া সম্ভব।
ফেইসবুকেই আছে অনেক উপায়
:
তরুণরা এখন দিনের বড় সময় কাটান সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেইসবুকে। এসব বিষয়ে ফেইসবুক থেকেই প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যায়। যাঁরা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শিখতে চান, তাঁরা https://www.facebook.com/groups/webseoguide গ্রুপে যোগ দিতে পারেন। https://www.facebook.com/groups/odeskhelp গ্রুপ থেকে পেতে পারেন ওডেঙ্-বিষয়ক তথ্যসহায়তা। ইন্টারনেট মার্কেটিং শেখার জন্য রয়েছে https://www.facebook.com/groups/bimpa গ্রুপ। উদ্যোগবিষয়ক সমস্যার সমাধানে https://www.facebook.com/groups/uddokta গ্রুপটি বেশ কাজের। ইন্টারনেটে অর্থ আদান-প্রদানবিষয়ক সমস্যার সমাধান পাবেন https://www.facebook.com/groups/emHelpline গ্রুপ থেকে।

প্রয়োজন প্রশিক্ষণ:

আমাদের দেশে ব্যবসাটি নতুন। তাই এ বিষয়ে জানাশোনা লোকের সংখ্যা বেশ কম। তাই নির্ভরযোগ্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করাই ভালো। ঢাকায় অনলাইন সাপোর্ট (www.earntricks.com), টেকনোবিডি (www.technobd.com), ডেভসটিম ইনস্টিটিউট (www.devsteam.com), ডিউজা আইটি সলিউশন (www.it.dueya.com), এনআইএইচআরডিসহ (www.nihrd.org) অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইন উদ্যোক্তা এবং ফ্রিল্যান্সিং-বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে কিছু প্রতারক প্রতিষ্ঠানও আছে। তাই জেনে, বুঝে ও খবর নিয়ে শুরু করতে হবে।

No comments:

Post a Comment